আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়: রাজা উপাখ্যান । এটি বাংলাদেশের উপন্যাসের শৈলীবিচার এর রূপক প্রতীকী শিল্পশৈলীর উপন্যাস এর অন্তর্গত।

রাজা উপাখ্যান
শওকত ওসমান(১৯১৭-১৯৯৮) সমাজ-দায়বদ্ধ শিল্পীর বিবেকী জাগরণ থেকে তাঁর রূপক প্রতীক উপন্যাসগুলো রচনা করেন। বিভাগ (১৯৪৭) উত্তর বাংলাদেশে আইয়ুবী শাসনে অবরুদ্ধ সমাজ ও রাষ্ট্রশক্তির বৈরী পরিস্থিতিতে যখন মুক্ত লেখনি সম্ভব ছিলোনা তখন রূপক-প্রতীকই উপযুক্ত শিল্পশৈলী হিসেবে তাঁর কাছে বিবেচিত হয়।
শাসকগোষ্ঠীর প্রণোদনায় সমকালীন অন্য লেখকরা যখন আরব-ইরানের পুঁথি-পুরাণের মধ্যে আপন ঐতিহ্যের সন্ধান করছিলেন তখন শওকত ওসমান সংকটদীর্ণ জাতীয় অস্তিত্বের মুর্কি আকঙ্খায় সেই পশ্চিম এশয়ি পটভূমিকে আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহার করে রূপক প্রতকশৈলীর শিল্পাঙ্গিকের উদ্বোধন ঘটান। এতে শাসক গোষ্ঠির রক্তচক্ষুকে যেমন এড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি রূপকের আড়ালে জননিপীড়নের প্রতিবাদ জানানোও সম্ভব হয়েছে।
ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাসের মূল কাহিনীর রূপকের আচ্ছাদন হিসেবে তিনি যেমন আরব্য রজনীর কথা উল্লেখ করেছিলেন, তেমনি ‘রাজা উপাখ্যান’-এর শুরুতে ইরানের কবি ফেরদৌসীর শাহনামা’র অসমাপ্ত কল্পিত কাহিনীর আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে শওকত ওসমান এক গবেষকের কাছে ব্যক্তিগত পত্রালাপে জানিয়েছেন :
‘রাজা উপাখ্যান’-এ শুধু ‘শাহানামা’ থেকে বাদশাহ জাহকের কাহিনীটুকু গৃহীত, বাকী সবই আমার কল্পনার সহচর। ফেরদৌসি জাহুকের গলায় সাপ জড়িয়েছিলেন ঠিকই। মগজ আহার ইত্যাদি সবই আমার কারিগরির ফল।
রূপকের আড়াল তৈরি করার জন্য ভূমিকা স্বরূপ শিরোনামহীন এ ধরণের কাহিনীর অবতারণা রূপক উপন্যাসেরই এক শিল্পকৌশল। শওকত ওসমান এশিল্পকৌশলকে অসাধারণ দক্ষতায় কাজে লাগিয়েছেন। ‘রাজাউপাখ্যান’-এর শিরোনামহীন ভূমিকার সারাৎসার-গজনীর সুলতান মাহমুদের সভাকবি ফেরদৌসি, বাদশার আদেশ মত ‘শাহনাম’ কাব্য রচনা করেন।
কিন্তু তাতে সুলতানের ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটায়, সুলতান কবিকে প্রতিশ্রুতি মত স্বর্ণমুদ্রা দেননি, কবি এজন্য সুলতানের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করলে তার প্রতি নেমে আসে দন্ডাদেশ। গ্রন্থাগারিক থেকে ‘শাহনামা’র শেষ অংশ চেয়ে তিনি একটি নতুন অধ্যায় কোনোক্রমে যোগ করা সম্ভব হলেও দন্ডাদেশ এড়াতে তিনি দ্রুত গজনী ত্যাগ করেন।
পর্বত সংকুল পথে চলতে কবি শাহনামা’র সম্রাট জাহুকের অসমাপ্ত অলিখিত কাহিনী বুনে চলছিলেন কল্পনার চোখে। প্রাণভীতির কারণে ওই কাহিনী ফেরদৌসি লিখে যেতে পারেন নি. ‘রাজা’ উপাখ্যান’ সেই অসমাপ্ত কল্পিত কাহিনীর শব্দরূপ। অর্থাৎ ‘রাজা উপাখ্যান’ কবি ফেরদৌসির “শাহনামা’র কাহিনীর রূপান্তর নয়, উপন্যাসের গল্পাংশের সূত্র হিসেবে ঔপন্যাসিক শিরোনামহীন প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন।
রূপক উপন্যাসের এ এক শিল্পকৌশল। মূল কাহিনী বর্ণনার পূর্বে গল্পবীজের প্রসঙ্গ যোজনা, কাহিনীকে বিশ্বযোগ্যতা দান করে এবং পাঠক কাহিনীর পটভূমিতে ডুবে যায়, ফলে সমকালীন সংকটের ইঙ্গিতময় সংকেত বুঝতে সময় লাগে। অর্থাৎ রূপকের আড়াল তৈরিতে এ ধরণের কাহিনীসূত্রের উল্লেখের একটি শৈল্পিক ভূমিকা রয়েছে। শওকত ওসমান ‘রাজা উপাখ্যান’-এর শুরুতে ব্যবহারে সফল হয়েছেন।

২.
‘রাজা উপাখ্যান’ (১৯৭০) উপন্যাসের কাহিনীবিন্যাসে রূপকের আড়াল, চরিত্র-চিত্রণে প্রতীকের ব্যবহার এবং পরিচর্যায় নাট্যলৈফী (dramatic manner) ও চিত্রশৈলীর (pictorial manner) শিল্পসম্মত প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। ‘রাজা উপাখ্যান’-এ শওকত ওসমান রূপকের (allegory ) ফর্ম পুরোপুরি অনুসরণ করেছেন। এ-উপন্যাসে মিথ- কাহিনীকে রূপকের আশ্রয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থ অপেক্ষা সমষ্টিস্বার্থ, ব্যক্তিপ্রেম অপেক্ষা সমষ্টিপ্রেম-এই- সর্বাধুনিক চেতনা এ-উপন্যাসের উপজীব্য।
এক্ষেত্র ঔপন্যাসিকের উদ্ভাবনী দক্ষতা সমকালীন জটিল সময় স্বভাবের সঙ্গে শিল্প অভিপ্রায়ের সঙ্গতিবিধান করেছে।” “রাজা উপাখ্যান’ এর কাহিনী খুব দীর্ঘ নয়- পারস্যের মাজেন্দারনের অত্যাচারী, প্রজাপীড়ক রাজা জাহুক দৈববাণী কর্তৃক অভিশপ্ত হলে দু’টি গোখরো সাপ তার গলায় বেষ্টন করে থাকে। সাপ দুটির প্রতিদিনের খাদ্য হিসেবে নির্ধারিত হয় বিশ-তিরিশজন তরুণ-তরুণী অথবা জ্ঞানী বৃদ্ধের মগজ।
রাজা যতদিন সম্পদ্বয়ের আহার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হবেন, সেদিন রাজার মগজই হবে স্বপর্যয়ের আহার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হবেন, সেদিন রাজার মগজই হবে স্বর্ণদ্বয়ের আহার। দৈব বিড়ম্বনায় অভিশপ্ত রাজা জাহুকের আর্তনাদ ধ্বনিত হয় রাজকন্যা গুলশানের সঙ্গের সংলাপ বিনিময়ে :
‘জাহুক-এই জানালায় বসে থাকি। এই ভাবে দরবার চলে। নিচে আমির ওমরা জমা হয়। তা-ও মাসে হয়ত একবার। আমি সম্রাট, তাই মানুষ নই আর।
গুলশান- পিতা, তুমি দূরে থেকে আমাকে যে যন্ত্রণা দিচ্ছে, আমি আর সহ্য করতে পারব না।
আহুক- আমার যন্ত্রণা আর বাড়িয়োনা মা। বরং আমার মৃত্যু হোক। কাল থেকে প্রহরীকে ঘিলু দিতে বারণ করো।
গুলশান- তোমার জীবন কতো অমূল্য। তা কী হয় পিতা। আর এই অভিশাপ একদিন কেটে যাবে বৈকি।
আহুক- কে জানে, করে। কিন্তু প্রতিদিন কত প্রাণ নিঃশেষ হচ্ছে।
রাজাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হাজার হাজার নিরাপরাধ লোক অর্থহীন ভাবে প্রাণ হারায়। পারস্যের দুই সম্রান্ত ব্যক্তি জামসেদ দারিস ও তার বন্ধু জার্জি, রাজা জাছকের গলায় বেষ্টিত সাপের আহার যোগানোর জন্য যুবক ও জ্ঞানী বৃদ্ধদের সরবরাহের কাজ করে প্রচুর অর্থ আয় করে। কিন্তু অবশেষে দুজনই নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে সাপের আহারে পরিণত হয়। দারিয়ুস যে উপলব্ধি নিয়ে জীবন উৎসর্গ করে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ :
“এই মগজ সরবরাহ দু’জনেই করেছি। কিন্তু চিন্তা করা অভ্যাস ছিল। একদিন বুঝতে পারলাম, দশ বছর ধরে এত নওজোয়ান কি জ্ঞান-সরস বৃদ্ধের যোগান দিলাম। দেশের মগজ থাকবে না। তখন থাকবে কি ? নাকবে শুধু পশুত্ব। ওদের যতটুকু মগজ আছে, ততটুকু থাকবে দেশে। অর্থাৎ দেশ জানোয়ারের দেশে পরিণত হবে। …… কিন্তু জানোয়ারের দেশে সব সম্পদ দিয়ে তুমি তোমার বংশধরদের রেখে যাচ্ছে। তারা কী দিয়ে মুখী হবে? জঙ্গলের জানোর সুখী, আর কেউ না । ১৯
রাজাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিরাপরাধ লোকদের ধরে আনা কয়েদীর মধ্যে হরমুজ নামক এক গ্রামীন যুবককে দেখে রাজকন্যা গুলশানের ভালোলাগে। গুলশান সখী সহেলীর সহায়তায় হরমুজের সঙ্গে কয়েদ থানায় গিয়ে সাক্ষাৎ করে। গুলশান, তাকে যুক্তি দিতে চাইলে সে মুক্তির চেয়ে কন্দীত্বের কারণ জানতে চায়। হরমুজ একা মুক্তি পেতে চায় না, সবার মুক্তিই তার কাম্য।
হরমুজ রাজকুমারী থেকে অভিশাপ্ত রাজার অবস্থা জানতে পেরে তাকে অভিশাপ মুক্ত করার চেষ্টা করে। গুলশানে সহায়তায় সে সাপ দুটির খাদ্যের তারতম্যে, ঘটিয়ে তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। হরমুজের কৌশলে সাপ দুটি আত্মকলহে মারা যায় এবং রাজা অভিশপ্ত মুক্ত হয়। রাজ্যে হাজার হাজার লোক প্রাণে বেঁচে যায়।
রাজা জাহুক শেষ পর্যন্ত প্রজাবৎসল রাজা হয়ে ওঠে এবং কন্যার ইচ্ছা অনুযায়ী হরমুজের সঙ্গে কন্যার বিবাহের আয়োজন করে। কিন্তু রাজার এ ব্যবস্থা হরমুজ মেনে নেয়না। বরং কয়েদ খানায় বাদী অবস্থায় অসুস্থ্য হলে ফেরমানের যে বন্দী যুবতী রুদ তর সেবা-যত্ন করে, সে মেয়েকে বিয়ে করে রাজ প্রাসাদ ও রাজ্যের লোভ করে প্রামে ফিরে যায়।
কাহিনীর এই বিন্যাসে দেখা যায় ‘রাজা উপাখ্যান’ সাংগঠনিক স্বভাবে রূপক, এবং চারিত্রচিত্রণে ও সংলাপে প্রতীকী (Symbolic)। ষাটের দশকে বাংলাদেশের আইয়ুবীয় স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট জনগণের মুক্তি আকাঙ্ক্ষাকে মিথ-বলার আবয়নে শওকত ওসমান এ উপন্যাসে চিত্রিত করেছেন। অভিশপ্ত রাজাকে শাপমুক্তি করা, পক্ষান্তরে তার জীবনোলব্ধিতে মানবীয় চেতনার উদ্ধোধন, ‘রাজা উপাখ্যান’ এর মূল বিষয়।
রাজা জাহুক উপন্যাসে পাকিস্তানের তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান, মাতৃহীনা নিঃঙ্গর রাজকুমারী গুলশান- বাংলাদেশ, এবং যুবক হরমজ-দেশের মুক্তিকামী তরুণ সম্প্রদায়। অর্থাৎ রূপক কাহিনীর আড়ালে, প্রতীকী চরিত্র সৃজনে ঔপন্যঅসক সমকালীন সামাজিক দায় ও বিবেকী চেতনতার প্রতিবাদকে অসাধারণ শিল্প সার্থকতায় তুলে ধরেছেন ‘রাজা উপাখ্যান’ উপন্যাসে।

‘রাজা উপাখ্যান’-এ চরিত্র-চিত্রণে ঔপন্যাসিক নাট্যশৈলী (dramatic manner) ও চিত্রশৈলী (pictorial manner)এ দুই শৈলীর পরিচর্যা করেছেন। উপন্যাসে হরমুজ জনগণের মুক্তি আকাঙ্ক্ষার প্রতীক চরিত্র। সে প্রেম ও মুক্তির প্রতীক। রাজার লোক তাকে ধরে নিয়ে এসেছে, কিন্তু সে জানেনা কি তার অপরাধ। বারবার সে তার বন্দীত্বের কারণ জানতে চেয়েছে। কায়েদখানায় অসুস্থ অবস্থায় ফেরাসের বন্দী যুবতী রুদ তার পরিচর্যা করলে, সেখানেই হরমুজের সঙ্গে তার ঘনিষ্টতা হয় এবং তা এক সময় প্রেসে রূপ লাভ করে।
রাজকুমারী গুলশান তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাকে মুক্তি দিতে চাইলে, সে একা মুক্তি পেতে চায় নি বরং সে সবাইকে মুক্ত করতে চেয়েছে। গ্রামীণ যুবক হলেও সে নিজের মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে অভিশাপগ্রস্ত রাজাকে শাপমুক্ত করে। ক্রমে সমস্ত বন্দী মুক্তি লাভ করে । শাপ মুক্তির পর রাজা জাহুক হরমুক্তকে রাজকন্যা দান এবং রাজ্যের দায়িত্ব দিতে চাইলেও সে তা প্রত্যাখান করে।
বরং সাধারণ মেয়ে রুদ্ধ নিয়ে সে গ্রামে ফিরে যায়। হরমুজ চরিত্রটিতে নির্লোভ, প্রেমময়, মানবীয় চেতনার সমাবেশ… ঘটিয়ে ঔপন্যাসিক বোঝতে চেয়েছেন, ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে সমষ্টিস্বার্থ এবং ব্যক্তিপ্রেম থেকে সমষ্টিপ্রেমই শ্রেষ্ঠ।
“শোষিত অরদ্ধ সমাজজীবনে ব্যক্তিস্বার্থ নয়- সামূহিক জীবনচৈতন্যে উত্তরণই হল প্রতাশিত। শোষণ-বঞ্চনা- অত্যাচার-শৃঙ্ক্ষলক্স জর্জরিত সমাজের প্রতি ঘৃণা এবং তা থেকে উত্তরণের প্রতীকী ইঙ্গিতে ‘রাজা উপাখ্যান’ অন্যন্য ।” অর্থাৎ হরমুজ হচ্ছে ঔপন্যাসিকের উদ্দেশ্য চালিত, মানসচেতনার প্রতীক চরিত্র।
রাজা জাকও এ উপন্যাসে প্রতীক চরিত্র। সে প্রজাপীড়ক, অত্যাচারী, দৈব বিড়ম্বনার অভিশপ্ত হলে দুটো গোখরো সাপ তার গলা বেষ্টনকরে থাকে। এই অবস্থায় সে একটি কক্ষে আবদ্ধ থাকে। মাসে একবার শুধু উপরের ধরের জানালায় আমির ওমরাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। আপন কন্যার সঙ্গের সে থাকতে পারে না। রাজার আত্মবন্দিত্ব, অসহায় পরিস্থিতি তার সংলাপে আর্তনাদের মতো ধ্বনিত হয়।
হরমুজের কৌশলে সে শাপমুক্ত হলে, তার মধ্যে মানবীয় চেতনার সমাবেশ ঘটে। সে প্রজাবৎসল রাজায় পরিণত হয়। বস্তুত রাজার এই মানবীয় বোধে উত্তরণকে জীবনের ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচর্যা করেছেন ঔপন্যাসিক। ঔপন্যাসে অন্য চরিত্রগুলোর মধ্যে রাজকুমারী গুলশান, পার্শ্ব চরিত্র সেহেলী, দরিয়ুস, জার্জিস স্ব-স্ব স্থানে অনিবার্য ভূমিকা পালন করেছে।
৩.
‘রাজা উপাখ্যান’ উপন্যাসে ঔপন্যাসিক পটভূমি অনুযায়ী ভাষা প্রয়োগ করেছেন। অর্থাৎ পশ্চিম এশীয় নিয়ম অনুসারে দরবারি আবহ, পরিবেশ ও আরবি, ফারসি শব্দের স্বচ্ছন্দ প্রয়োগ এ-উপন্যাসে আমরা লক্ষ করি। যেমন :
ক. ‘মায়া-মহব্বত নিয়ে বানদার হুকুম পালন চলে না। যদি আওরাত দিল হও আমার দল ছাড়ো।
খ, আর সে বাদশ নয়, গোলাম। আর সেই হবে এ রাজ্যের বাদশা যার সকলের গোলাম হওয়ার ক্ষমতা আছে।
বিশেষত সংলাপে আরবি, ফারসি শব্দের বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। উদ্ধৃতাংশে আরবি শব্দ ‘মহব্বত’ (নিবিড় সম্পর্ক ) হুকুম (আদেশ) ‘গোলাম’ (প্রজা), ফারসি শব্দ- ‘বাদশা’ (মালিক, রাজা) দিল(হৃদয়) উর্দু শব্দ- ‘আওরাত’ (মেয়েলোক) ইত্যাদি। বাক্যের গঠন দীর্ঘ নয়। চরিত্রের মনোভঙ্গির ও ভাবপ্রকাশে উপযোগী তার রচিত হয়েছে বাক্যরাজি।

বর্ণনা-বিবরণে তৎসম শব্দের অধিক প্রয়োগ লক্ষণীয় :
ক. সগর্জন আর গর্জন নেই। হিংসা এবং জিদাংগার চরম পর্যায়ে ঘাতক যেমন আরো সরীসৃপতা সঞ্চয়ে চীৎকার দেয়, এই ফেঁসে ধ্বনি তেমনই বিকট কিছু
খ. বন্দীদল এখন নীরবে হাঁচছিল। সকলেই জওয়ান। কয়েকজন অবয়বে রীতিমত সুন্দর। ক্লান্তি তাদের জৌলুস নিভিয়ে দিতে পারেনি, যদিও ছেটা কিছু নিষ্প্রভ।
সংলাপময় নাট্যশৈলী চিত্র নালীরপ্রয়োগের ফলে ভাষা সাবলীল সৌকর্য মণ্ডিত হয়ে উঠেছে। বাক্য ছোট বাড়
অসমান।